গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় (ইসিএ) টাস্কফোর্সের অভিযানে ৭০০ বারকি নৌকা ও প্রায় ১০ লাখ ঘনফুট বালু-পাথর জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত বালু-পাথরের বাজারমূল্য দেড় কোটি টাকা। ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা। এই চক্রের বিরুদ্ধে স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবুও এই চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। এই চাঁদাবাজরা স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ঘনিষ্ঠজন বলে জানা গেছে।
সোমবার গোয়াইনঘাটের ইউএনও তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে এসব জব্দ করা হয়। অভিযানে সেনাসদস্য ছাড়াও উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা অংশ নেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের বহিষ্কৃত সভাপতি আজির উদ্দিন, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয় সহ-সভাপতি সুমন শিকদার, সহ-সভাপতি পারভেজ শিকদার ও রুবেল আহমদের নেতৃত্বে জাফলংয়ের প্রতিবাদী যুবক ইসমাইলের উপর হামলা চালানো হয়। এই হামলায় গুরুতর আহত অবস্থা ইসমাইলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা সবাই বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা নেতা শাহ আলম স্বপনের বলয়ের লোক বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। যার ফলে এদের বিরুদ্ধে থানায় কোন মামলা হয়নি। এই চাঁদাবাজদের কোন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এলাকায় তোলপাড় বিরাজ করছে। এরাই জাফলং এলাকা জুড়ে ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তোলেছে।
ইউএনও তৌহিদুল ইসলাম জানান, জাফলং পাথর কোয়ারি এলাকার বল্লারঘাট, জাফলং চা বাগানের নদীর তীর, জাফলং সেতু ও ছৈলাখাল এলাকায় অভিযান করে টাস্কফোর্স। ওই সময় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী ৭০০ নৌকা ছাড়াও পৃথক স্থান থেকে ৯ লাখ ৬৬ হাজার ঘনফুট বালু, ১০ হাজার ঘনফুট পাথর ও দুটি পাথরভাঙা মেশিনসহ পাথর পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত কয়েকটি গাড়ি জব্দ করা হয়।
২০১৫ সালের ১৪ নভেম্বর জাফলংকে ইসিএ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়।
এর আগে ২০১২ সালে পরিবেশ আইনবিদ সমিতির করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জাফলংকে ইসিএ ঘোষণার নির্দেশনা দেন আদালত। ইসিএ ঘোষণার পর জাফলং থেকে সব ধরনের বালু ও পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়। তারপরও একটি চক্র ইসিএ এলাকায় বালু-পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে পরিবেশবিধ্বংসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।
Leave a Reply